আজ থেকে প্রায় ১৩৭০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাংয়ের পর থেকে এই মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হয়ে চলেছে। অণু–পরমাণু থেকে নক্ষত্রপুঞ্জ বা নীহারিকা সৃষ্ট জ্যোতির্ময় বেষ্টনী (গ্যালাক্সি) সবকিছুই এই মহাবিশ্বের অন্তর্ভুক্ত।
যখন আমরা বলি মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে, তখন বুঝতে হবে এই সম্প্রসারণ প্রচলিত ধারণার মতো নয়। সম্প্রসারণ হচ্ছে এই মহাশূন্যের মধ্যেই। অর্থাৎ আমাদের গ্যালাক্সির বাইরে অন্য গ্যালাক্সিগুলোর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে ওগুলো আমাদের গ্যালাক্সি থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে। আসলে অন্যভাবে বলা যায় যে গ্যালাক্সিগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এই অর্থে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে।
দূরের গ্যালাক্সিগুলো সবচেয়ে বেশি দ্রুত দূরে সরে যাচ্ছে এবং ওদের গতি ক্রমাগত বাড়ছে। এ জন্য বলা হয়, মহাশূন্যের সম্প্রসারণ ঘটছে ত্বরণ গতিতে। এ ধরনের সম্প্রসারণ বোঝার জন্য আমরা একটি উদাহরণ দিই। ধরা যাক, কিছু ছোট রঙিন বিন্দু চিহ্নিত একটি বেলুন ফুঁ দিয়ে ফোলাচ্ছি। দেখা যাবে বিন্দুগুলো ক্রমেই একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। মহাশূন্যও এভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। সংকুচিত হওয়ার প্রশ্ন এখানে আসছে না। তবে যেসব গ্যালাক্সি নতুন নতুন নক্ষত্রের জন্ম দেয়, সেগুলোর আকৃতি সংকুচিত হতে পারে বলে মহাকাশবিজ্ঞানীরা মনে করেন। এটা মহাবিশ্বের সংকোচন নয়। ধারণা করা হয়, কয়েক শ কোটি বছরের মধ্যে আমাদের গ্যালাক্সি, ছায়াপথে নতুন নতুন নক্ষত্র সৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাবে। সাধারণ পর্যবেক্ষণ থেকে বলা যায়, অনাদিকাল ধরে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হবে। এর ফলে মহাবিশ্ব শীতল হতে থাকবে এবং একসময় প্রাণের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। এ রকম একটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি আগে ‘হিট–ডেথ’ নামে পরিচিত ছিল। এখন বিগ ব্যাংয়ের সঙ্গে মিল রেখে বলা হয় ‘বিগচিল’ বা ‘বিগফ্রিজ’।