ইতিহাসের জনক কে? | Who is the father of history?

ইতিহাসের জনক কে?

ইতিহাস সম্পর্কে জানতে কিংবা ইতিহাস মুলক বই পড়তে আমরা সকলেই পছন্দ করি। কিন্তু আমরা কি জানি এই ইতিহাসের জনক কে? অর্থাৎ কাকে ইতিহাসের জনক বলা হয় আর কেনইবা তাকে ইতিহাসের জনক (The father of history) বলা হয়ে থাকে? আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্যাদি জানার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

ইতিহাস কাকে বলে?

ইতিহাসের কথা আসলেই আমাদের মাথায় সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসে সেটা হলো ইতিহাস কাকে বলে বা ইতিহাসের সংজ্ঞা টাই বা কী? সাধারণত সমাজ ও রাষ্ট্রে নিরন্তর বয়ে যাওয়া ঘটনা প্রবাহকে ইতিহাস বলা যায়। তবে ইতিহাস কী তা এক কথায় বলা কঠিন। বিভিন্ন পণ্ডিত ইতিহাস প্রসঙ্গে নিজেদের মতো করে বিভিন্ন মত দিয়েছেন। ইতিহাস নিয়ে সহজেই একটি নির্দিষ্ট সংজ্ঞায় পৌঁছানো যায় না। তবে পণ্ডিতগণের দৃষ্টিভঙ্গী ও মতামত সমূহ বিশ্লেষণ করলে একটি সাধারণ সংজ্ঞা তৈরি করা সম্ভব। ঐতিহাসিকগণের বক্তব্যের আলোকে সংক্ষেপে বলা যায় যে, ‘অতীত উপাদানসমূহ বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে মানব সমাজের সমুদয় ঘটনার বিবরণকে ইতিহাস বলে’।


ইতিহাসের জনক কে?

ইতিহাসের জনক কে?

ইতিহাসের সংজ্ঞা জানার পরেই প্রশ্ন আসে ইতিহাসের জনক সম্পর্কে। ইতিহাসের জনক হচ্ছেন হেরোডেটাস। যিনি ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রিক ইতিহাসবিদ। তিনি পারসিয়ান সম্রাজ্যের (বর্তমানে, আধুনিক তুর্কি) হেলির্কানাসাস (বর্তমানে, আধুনিক তুর্কি) -এ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম লেক্সেস(Lyxes) এবং মায়ের নাম ডারইউটাম (Dryotus)। 

তিনি ‘The Histories’ বইটি লেখার জন্য খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেন, বইটিতে ছিলো গ্রিকো-পারসিয়ান যুদ্ধগুলোর উপর গবেষণার একটি বিশদ নথি। বর্তমান সময়ের অনেক গবেষকই তার জীবন সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য তাকে নিয়ে লেখার জন্য মনেযোগ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও তারা “Byzantine”, “Suda” সহ প্রচীন কিন্তু আরো পরের উৎসগুলোর দিকেও মনোযোগ দেন। তবে এক্ষেত্রে তথ্যের পরিমাণ এত কম যে সেগুলো খুবই পরে অল্প নির্ভরযোগ্যতা পেয়েছে। এই তথ্যগুলো দিয়ে একটি জীবনী তৈরি করা অনেকটা তাসের বাড়ি তৈরি করার মতো ব্যাপার। 

হেরোডোটাস কে ইতিহাসের জনক বলা হয় কেন?

ইতিহাসের জনক হেরোডেটাসের সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানার পর আমাদের অনেকের মনেই হয়তো এ প্রশ্ন আসছে যে হেরোডেটাসকেই কেনো ইতিহাসের জনক বলা হচ্ছে? চলুন তাহলে এবার জেনে নেই হেরোডেটাস কে ইতিহাসের জনক বলার কারণ -

হেরোডোটাসই হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি ঐতিহাসিক বিষয়গুলোর উপর একটি বিশেষ পদ্ধতির অনুসন্ধান করেন, যেখানে তিনি ঐতিহাসিক ধাতুসমুহ সংগ্রহ করেন এবং ইতিহাস লিখনধারা অনুযায়ী সাজান। যার কারনে তাকে “The Father of History” বা ইতিহাসের জনক বলা হয়। রোমান ওরেটর, সিসোরা তাকে সর্বপ্রথম এ সম্মান প্রদান করেন।

তবে তার লেখা ইতিহাসগুলোর অধিকাংশরই বিষয় ছিল ক্রোসাস, সাইরাস, কেমবাইসেস, এসমারডিস, মহান দারিয়াস। তার বইগুলোতে অনেক অসত্য এবং কাল্পনিক ঘটনা উল্লেখ থাকায় তাকে সমালোচিতও হতে হয়েছে নানা মহল থেকে। পঞ্চম শতাব্দির শেষের দিকের অনেক ইতিহাসবিদ, তাকে বিনোদনের জন্য কাহিনী তৈরি করার অভিযোগ পর্যন্তও করেছে।

ইতিহাসের পরিসর:

আমরা যারা এতক্ষণ আর্টিকেল টি মনোযোগের সাথে পড়েছি তারা জানি যে, মানুষ কর্তৃক সম্পাদিত সকল বিষয়ই ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত। সময়ের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস চর্চা ও গবেষণায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রাগৈতিহাসিক যুগের প্রথম পর্বের মানুষের কর্মকাণ্ড খাদ্য সংগ্রহের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। ফলে সে সময় ইতিহাসের পরিসরও খাদ্য সংগ্রহমূলক কর্মকাণ্ড পর্যন্তই বিস্তৃত ছিল। কিন্তু বর্তমানে যেমন এর শাখা প্রশাখার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিস্তৃত হয়েছে এর সীমানাও।

এতক্ষণ আমরা জানার চেষ্টা করেছি ইতিহাস কাকে বলে, ইতিহাসের জনক কে, কেন তাকে ইতিহাসের জনক বলা হয় এবং পরিশেষে ইতিহাসের পরিসর সম্পর্কে। এর আগের আর্টিকেল টিতে আমরা জেনেছি জ্ঞান বিজ্ঞানে মুসলিম মনীষীদের অবদান সম্পর্কে। যারা এখনও সেটা পড়েননি ব্লু মার্ক করা লেখাটিতে ক্লিক করে অনায়াসেই সেটি পড়ে আসতে পারেন।

ধন্যবাদ


Post a Comment

Previous Post Next Post