আমাদের যদি জিজ্ঞাসা করা হয় বিশ্বের সবচেয়ে দামী ৫ টি বস্তু কোনগুলো? তাহলে আমরা অধিকাংশ লোকই হয়তো হীরার কথাই শুরুতে বলবো। তবে হীরা কি সত্যিই পৃথিবীর সবচেয়ে দামী বস্তু? না হীরার চেয়েও দামী জিনিস আমাদের পৃথিবীতে রয়েছে? আজ আমরা জানবো পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ৫ টি বস্তু সম্পর্কে -
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ৫ টি বস্তু (Top 5 most expensive things in the world):
Tefit:
সবচেয়ে মূল্যবান ৫ টি বস্তুর তালিকায় ৫ নাম্বারে থাকছে Tefit। দেখতে অনেক সুন্দর তবে হীরার চেয়েও অনেক বেশি দুর্লভ এই পদার্থটির মূল্য আমাদের ধারনারও অনেক বাহিরে। কারণ এর ১ গ্ৰামের মূল্য প্রায় ১৭ লাখ টাকা। আলাদা আলাদা রঙে পাওয়া এ পদার্থ পুরো পৃথিবীতে একটি আলাদা পরিচয় সৃষ্টি করেছে। এই দুর্লভ বস্তুটি বিশেষ করে শ্রীলঙ্কায় পাওয়া যায়। শুধুমাত্র সৌখিন মানুষেরাই এটা নিজের কাছে রাখার শখ রাখতে পারে।
Tritium:
সবচেয়ে মূল্যবান ৫ টি বস্তুর তালিকায় ৪ নাম্বারে থাকছে Tritium। হাইড্রোজেন বক্সে যে গ্যাস দেওয়া হয় সেটা ট্রিটিয়াম দিয়ে তৈরি করা হয়। এই ট্রিটিয়ামের ১ গ্ৰামের দাম ২৫ লাখ টাকারও বেশি। পৃথিবীর কোনো ল্যাবই এটাকে কৃত্রিম ভাবে বানাতে পারবেনা। এটাকে প্রাকৃতিক ভাবে পৃথিবীর কয়েকটি জায়গায় পাওয়া যায়। তবে এর সামান্য পরিমাণ এখন পর্যন্ত পানি থেকেও বের করা হয়েছে। তবে কেউ যদি এই ট্রিটিয়াম সংগ্ৰহের কথা চিন্তা করে ছাড়লে ১ কেজি ট্রিটিয়ামের জন্য ১০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে হবে। এটিও একটি রেডিও এক্টিভ পদার্থ।
তবে অন্য সব রেডিও এক্টিভ পদার্থ তুলনায় এটি মানুষের কম ক্ষতি করে। আর এই দুর্লভ পদার্থটি রিসার্চ ও হাতিয়ার বানাতে ব্যাবহার করা হয়। তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এটার সামান্য পরিমাণ যদি একটা টিউব লাইটে দেওয়া হয় তবে ঐ টিউব লাইট টি টানা ২৫ বছর আলো দেবে।
Californium:
সবচেয়ে মূল্যবান ৫ টি বস্তুর তালিকায় ৩ নাম্বারে থাকছে Californium। এই বস্তুটি এতটাই দামী যে যার মূল্য বিশ্বাস হয়তো হবে না অনেকেরই। এর ১ গ্ৰাম কিনতে হলে পুরো ৭০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। তবে এটা মানবজাতির জন্য অনেক বিপদজনক পদার্থ। ১৯৫০ সালে এটা প্রথমবার একটি ল্যাবে বানানো হয়। তাহলে একটি প্রশ্ন হয়তো আমাদের সকলের মনেই আসছে আর সেটা হলো যদি এটা এতটাই বিপদজনক হয় তাহলে বিজ্ঞানীরা এটা বানাচ্ছে কেন? আসলে অনেক রেডিও এক্টিভ পদার্থ দিয়ে মানুষের চিকিৎসা করানো হয়। হ্যা, এই জীবন নেয়া পদার্থটি মানুষের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। যেখানে অন্যসব রেডিও এক্টিভ পদার্থ হার মানে সেখানে Californium সফলতার সাথে তা করে ফেলে। এমনকি ব্রেইন ক্যান্সার প্রতিকারের জন্যও এই Californium ব্যবহার করা হয়।
Whale vomating:
সবচেয়ে মূল্যবান ৫ টি বস্তুর তালিকায় ২ নাম্বারে থাকছে Whale vomating বা তিমির বমি। এটি পুরুষ তিমির পেটের ভিতরে পাওয়া যায়। আপনাদের বিশ্বাস করতে হয়তো কষ্ট হবে যে, পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো পারফিউমের ব্রান্ড গুলোতে আরো বেশি সুগন্ধ যোগ করার জন্য এটা ব্যবহার করে। তবে মানুষ শুধু এটার সুগন্ধই পছন্দ করেনা, কিছু কিছু মানুষ তো এটা খেতেও পছন্দ করে।
Antimatter:
সবচেয়ে মূল্যবান ৫ টি বস্তুর তালিকায় শীর্ষে থাকছে Antimatter। আর এ জিনিসটাকে যদি অমূল্য বলা হয় তাহলেই হয়তো ঠিক হবে। কারণ এর দামে এতগুলো ০ রয়েছে যেটা গুনতে হাঁপিয়ে উঠবেন অনেকেই। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন পৃথিবীতে যদি সবচেয়ে বেশি দামী কিছু থাকে তবে সেটা Antimatter। কারণ এর ১ গ্ৰামের দাম ১৭৭ ট্রিলিয়ন ডলার। তবে অবাক করা বিষয় হলো এই অমূল্য বস্তুটি পৃথিবীর সবজায়গাতেই রয়েছে। তবে কেউ এটাকে দেখতে পারে না। পৃথিবীর সব বড় বড় বিজ্ঞানীরা মিলে ল্যাবে এটার খুব কম পরিমাণ তৈরি করেছে।
এতক্ষণ আমরা জানলাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামী বস্তু সমূহের মধ্যে শীর্ষে থাকা ৫ টি বস্তু সম্পর্কে। যেগুলো হলো Tefit, Tritium, Californium, Whale vomating এবং পরিশেষে Antimatter সম্পর্কে। তবে উপরোক্ত বস্তু সমূহের মধ্যে আপনাকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করেছে যে বস্তুটি তা আমাদের জানাতে নিচের কমেন্ট বক্সটি ব্যবহার করুন।
ধন্যবাদ
Tags:
World