বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়া সেরা ১০ হ্যাকার | Top 10 hackers in the world

বিশ্বের সেরা ১০ হ্যাকার

বিশ্বের সেরা ১০ হ্যাকার (Top 10 hackers in the world):

আজকের এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমরা মুহূর্তেই ঘরে বসে সারা বিশ্বের খবরাখবর নিতে পারছি। হাতের ছোট্ট এই মুঠোফোন টির সাহায্যে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে থাকা ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ করতে পারছি। যেখানে একটা তথ্যের জন্য কয়েক দশক আগেও আমাদের সেখানে স্বশরীরে উপস্থিত হতে হতো আজকের এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সেটা চোখের পলকেই সম্ভব হচ্ছে। তবে এত সুবিধার মাঝেও সুচ হয়ে ঢুকে খাল হয়ে বেড় হচ্ছে এক শ্রেণীর সম্প্রদায় যাদেরকে আমরা হ্যাকার বলে জানি।

হ্যাকার মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে, ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার যারা কিনা সাধারনত কম্পিউটার সিস্টেমকে নষ্ট করার উদ্দেশে হ্যাকিং করে থাকে। বিভিন্ন সাইবার ক্রাইমের সাথে লিপ্ত এসব হ্যাকাররা তাদের অস্তিত্ব গোপন করে হ্যাকিং করে থাকে। তবে এমন কিছু হ্যাকারও রয়েছে যারা মজা বা কৌতুহলরের জন্যই হ্যাকিং করে আবার কিছু বাক্তিগত প্রয়োজন বা অর্থের জন্য করে থাকে।

অপরদিকে হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারদের এথিক্যাল হ্যাকারও বলা হয়। এরা কোন কম্পানির হয়ে কাজ করে এবং কম্পানির সিকুউরিটির উপর নজর রাখে।

এছাড়াও আর একশ্রেণীর হ্যাকার রয়েছেন যাদের গ্ৰে হ্যাট হ্যাকার নামেও ডাকা হয়। তবে আজ আমরা হ্যাকিং এর সংজ্ঞা নিয়ে নয় বরং বিশ্বকে তাক লাগানো সেরা ১০ হ্যাকার নিয়ে কথা বলব-


আসট্রা

আসট্রাঃ 

নাম শুনে চমকাবেন গেলেন? তা অবশ্য চমকানোরও কথা কেননা আসট্রা নামে যিনি অনলাইনে হ্যাকিং কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি কখনোই নিজের আসল নাম প্রকাশ করেন নি। ২০০২ সাল থেকে ২০০৮ সালের মধ্যবর্তী পাঁচ বছর সময়ে তার জীবনের সবচাইতে বড় হ্যাকিং কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন। এ সময়ে তিনি প্রতিরক্ষা বাহিনির ওয়েবসাইটহ্যা করে সমস্ত অস্ত্রের ডিজাইন সংক্রান্ত সমস্ত ডাটা নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসেন এবং সারা বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন কাস্টমারের কাছে সেই ডাটা ৩৬১ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন।গ্রীসের এথেন্স শহরের একটি এপার্টমেন্ট থেকে তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করেন।


আলবার্ট গঞ্জালেজ

আলবার্ট গঞ্জালেজঃ 

সেরা হ্যাকারদের তালিকায় অন্যতম আলবার্ট গঞ্জালেজ। কারণ কী জানেন? টানা দুই বছর ধরে তিনি প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন ক্রেডিট কার্ডের নাম্বার হ্যাক করেছেন এবং সেই ক্রেডিটকার্ডগুলো আসল মূল্যের চাইতে অনেক কম দামে অনলাইনে বিক্রি করেছেন। আর এ ক্রেডিট কার্ড হ্যাকের মাধ্যমে তিনি প্রায় ১০০ কোটি ডলার ভিকটিমদের কাছে থেকে হাতিয়ে নিয়েছিলেন। তবে একসময় তিনি ধরা পরে যান এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন। তাকে ৪০ বছরের কারাভোগ করার নির্দেশ দেয়া হয়।


ওউয়েন ওয়াকার

ওউয়েন ওয়াকারঃ 

সেরা হ্যাকারদের তালিকায় আরও একটি মোটাদাগের নাম ওউয়েন ওয়াকার, ওয়াকারের বয়স যখন মাত্র ষোল বছর ছিলো তখন তিনি বিশ্বখ্যাত একটি হ্যাকিং দলের সাথে যুক্ত হন এবং বিভিন্ন কোম্পানির ক্রেডিট কার্ড হ্যাক করে প্রায় ২৬ মিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেন। তাছাড়া তার তৈরী বট ভাইরাস সারা পৃথিবীর ১৩ লক্ষ কম্পিউটারকে সম্পুর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছিলো। যদিও তিনি নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। তবে মজার বিষয় হলো তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ না থাকায় তিনি ছাড়া পেয়ে যান।


গ্যারি ম্যাকিনন

গ্যারি ম্যাকিননঃ

যারা হ্যাকিং সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানেন তারা অবশ্যই এই নামটি শুনে থাকবেন। বিশ্বের ইতিহাসের সবচাইতে বড় মিলিটারি কম্পিউটার হ্যাকের সাথে জড়িয়ে ছিলেন এই ব্যক্তি। তিনি আমেরিকান আর্মড ফোর্স এবং নাসার ৯৭ টি কম্পিউটার হ্যাক করেন। তিনি শুধু হ্যাক করে শান্ত থাকেননি বরংআ ফোর্সের কম্পিউটার গুলো থেকে অস্ত্রস যাবতীয় তথ্য মুছে দিয়েছিলেন।


জেনসন জেমস

জেনসন জেমসঃ 

জেমসই প্রথম হ্যাকার যিনি হ্যাকিং বট তৈরী করেছিলেন এবং তার তৈরি বট দিয়ে যেসব কম্পিউটার আক্রান্ত হয়েছিলো সবগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে করে নিয়ে নিয়েছিলেন। তার তৈরী বট দিয়ে প্রায় ৫০০,০০০ কম্পিউটার আক্রান্ত হয়েছিলো যার মধ্যে ইউএস মিলিটারি কম্পিউটারও বাত যায়নি।


আদ্রিয়ান লোমো

আদ্রিয়ান লোমোঃ

বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় হ্যাকারদের কথা বলতে গেলে যার নাম না বললেই নয় তিনি হলেন আদ্রিয়ান লোমো। আদ্রিয়ান লোমো বিখ্যাত মাইক্রোসফট, ইয়াহু সহ বড় বড় কোম্পানি হ্যাক করার জন্য। তিনি শুধুমা কিংবা ইয়াহুর ওয়েবসাইটই হ্যাক করেননি, তিনি হ্যাক করেছেন ব্যাংক অব আমেরিকা, সিটি গ্রুপ এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো বিখ্যাত সব ওয়েবসাইট। তাকে আরো বিখ্যাতক দিয়েছে তার হ্যাক করার পদ্ধতি। তিনি পাবলিক ইন্টারনেট ব্যবহার করে এসব ওয়েবসাইটহ্যা করেছেন। পাবলিক ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করে হ্যাক করার জন্য তাকে 'হোমলেস হ্যাকার' নামে নতুন উপাধি দেয়া হয়েছিলো। ২০০৪ সালে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং তাকে ৬ মাস গৃহবন্দী করে রাখা হয়। তাছাড়া তাকে ৬৫০০০ ডলার অর্থদন্ডও দিতে হয়েছিলো।


মাফিয়াবয়

আদ্রিয়ান লোমো মাফিয়াবয়ঃ

মাফিয়াবয় একজন কানাডিয়ান হ্যাকার। তিনি ইয়াহু, ফিফা, অ্যামাজন, সিএনএন, ডেল এর মতো বড় বড় ওয়েবসাইট হ্যাক করেছেন। তবে অবাক করা বিষয়টা হলো এরপরেও তাকে মাত্র আট মাসের জেল দেয়া হয়। মাত্র আট মাসের জেল দেয়ার কারণ কি বলতে পারেন? কারণ হলো তখন তিনি মাত্র ক্লাস এইটে পড়তেন।


ম্যাথু বেভান এবং রিচার্ড প্রাইস

ম্যাথু বেভান এবং রিচার্ড প্রাইসঃ

১৯৯৬ সালে দুজনের বয়স ছিলো যথাক্রমে ২১ এবং ১৭, সেই সময় তারা হ্যাক করেন ইউএস মিলিটারি কম্পিউটার। তারা শুধু ইউএস মিলিটারি কম্পিউটার হ্যাক করেই শান্ত ছিলেন তা নয় - তারা উত্তর কোরিয়ার সরকারী নিরাপত্তাকাজে নিয়োজিত কম্পিউটারও হ্যাক করেছিলেন।


কেভিন মিটনিক

কেভিন মিটনিকঃ 

এবার আমরা জানবো বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকারদের তালিকায় শীর্ষে থাকা কেভিন মিটনিক সম্পর্কে। কেভিন মিটনিক হলেন মোস্ট ওয়ান্টেড সাইবার ক্রিমিন্যাল ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড। আইবিএম , মটোরোলা এবং বেশ কিছু টেলিকম কোম্পানির ডাটাবেজ হ্যাক করে তিনি প্রায় এক বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি হানা দিয়েছিলেন আমেরিকান ন্যাশনাল সিকিউরিটি সিস্টেমেও । তিনি দুইবার ধরা পড়েন এবং দুইবারই মুক্তি পেয়ে যান। বর্তমানে তিনি সিকিউরিটি এক্সপার্ট হিসেবে একটি কোম্পানিতে কাজ করছেন।

আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা জানলাম বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়া সেরা ১০ হ্যাকার দের সম্পর্কে। এই ধরনের আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পড়তে কিংবা নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে চোখ রাখুন আমাদের Reporter Shaown নামক আরেকটি ওয়েব সাইটটিতে।

ধন্যবাদ
  

Post a Comment

Previous Post Next Post