কোন দিকে ফিরে ঘুমানো উচিত | ডান দিকে ফিরে ঘুমানোর উপকারিতা

 

কোন দিকে ফিরে ঘুমানো উচিত


শুরুতেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি সম্মানিত পাঠকদের যারা নিয়মিত আমাদের এই ওয়েব সাইটটির সাথে রয়েছেন। আমরা বরাবরই চেষ্টা করি নতুন নতুন তথ্যের আপডেট সমূহ আপনাদের কাছে তুলে ধরতে। আজও আমরা বহুল আলোচিত একটি টপিক নিয়ে আলোকপাত করবো। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা জানবো আমাদের কোন দিকে ফিরে ঘুমানো উচিত কিংবা ডান দিকে ফিরে ঘুমানোর উপকারিতাই বা কী?


কোন দিকে ফিরে ঘুমানো উচিত?

দৈহিক ও মানসিক প্রশান্তির জন্য নিয়মিত ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারাদিন ক্লান্তির পর একটি ঘুম আমাদের শরীরকে চাঙ্গা করে তুলতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম শরীর সুস্থ থাকার অন্যতম পূর্বশর্ত। তবে পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য শুধু সময়ই যথেষ্ট নয়। সঠিক ঘুমের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানাটাও জরুরি।

সোজা হয়ে ঘুমানো সবচেয়ে ভাল বলে ধরে নেওয়া হতো বহু দিন পর্যন্ত। কিন্তু বর্তমানের গবেষণা বলছে, এক পাশ ফিরে ঘুমানো আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক বেশি ভাল। ঠিক মতো ঘুমাতে পারলে পিঠে-কোমরে ব্যথা কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে নাক ডাকার সমস্যাও অনেকটা কমে যায়। এছাড়া যাদের জটিল অসুখ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও নাক ডাকা একটি প্রধান উপসর্গ।


ডান দিকে ফিরে ঘুমানোর উপকারিতা

ঘুম আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় এক নিয়ামত। সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য ঘুমের বিকল্প নেই অন্য কিছু পাবেন না। শারীরিক-মানসিক ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করতে আল্লাহ ঘুমকে প্রধান মাধ্যম বানিয়েছেন। পবিত্র কোরআন এ আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী। আর রাত্রিকে করেছি আবরণস্বরূপ।’ (সুরা নাবা : ৯-১০)। (সুবহানাল্লাহ) প্রতিটি মুসলমানের উচিত ঘুমকে ইবাদতে পরিণত করতে সুন্নত ও শরিয়ত মোতাবেক আদব মেনে ঘুমাতে যাওয়া। কেননা ঘুমের সুনান ও আদাব এবং নিয়তের প্রতি লক্ষ রাখা হলে ঘুমের প্রতিটি মুহূর্তই বান্দার আমলনামায় সওয়াব হিসেবে জমা হতে থাকবে।

ঘুমের অন্যতম প্রধান সুন্নত হলো ডান কাত হয়ে শোয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) ভালো ও তুলনামূলক উত্তম কাজে ডানকে প্রাধান্য দিয়েছেন। ঘুমানোর ক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ডান দিকে কাত হয়ে সবসময় বিশ্রাম গ্রহণ করতেন। হজরত বারা ইবনে আযেব (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন নিজ বিছানায় বিশ্রাম নিতে যেতেন, তখন তিনি ডান পাশের ওপর নিদ্রা যেতেন।’ (বুখারি : ৬৩১৫)। 

ডান দিকে কাত হয়ে শোয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। রাসুলুল্লাহ (সা.) সবসময় ডান পাশ হয়ে ডান হাতের তালুর ওপর মুখমণ্ডলের অংশবিশেষ গালে রেখে কেবলামুখী হয়ে শয়ন করতেন। কেননা বুকের বাম পাশে হৃৎপিণ্ডের অবস্থান। চিকিৎসকরা সবসময় হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে থাকেন। সুতরাং কেউ বাম পাশ হয়ে শয়ন করলে স্বাভাবিকভাবেই তার হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ পড়বে। আধুনিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ডান দিকে কাত হয়ে শয়ন করলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে।

এছাড়াও চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে পাকস্থলির খাদ্য শোষণের পথ হলো ডান দিকে। ডান দিকে কাত হয়ে শয়ন করলে খাবার পরিপাকে সুবিধা হয়। খাবার একত্রে আর জমে থাকে না। এছাড়াও ঘুম সম্পর্কে মুম্বাই হাসপাতালের ডা. কৃষ্ণ লাল বর্মা গবেষণা করে জানান, যেসব রোগীকে ডান দিকে কাত করে শয়ন করানো হয়েছে, তারা দ্রুত আরোগ্য লাভ করেছে। অতএব ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমানো সুন্নত। আর সুন্নতের মাঝেই রয়েছে অসীম রহমত ও বরকত। ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমানোর পরে কেউ যদি ঘুমানোর অবস্থান পরিবর্তন করেন, তবে সেক্ষেত্রে তার হিসাব আলাদা। 

আল্লাহ তায়ালা আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্নাহ অনুসরণের তওফিক দান করুন। আমিন।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেল টি ভিজিট করুন।

ধন্যবাদ

Post a Comment

Previous Post Next Post